
শাহজাহান আলী মনন, সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি :০১ এপ্রিল-২০২২,শুক্রবার।
রেস্টুরেন্টে ধর্ষনের শিকার এক কলেজ ছাত্রীর (১৯) মামলায় অভিযুক্ত জায়েদ আলী জয় (২১) কে সহ সৈয়দপুর প্লাজা সুপার মার্কেটের দুই রেষ্টুরেন্ট মালিককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) দুপুরে নীলফামারীর সৈয়দপুরে এই ঘটনা ঘটেছে।
জয় উপজেলার বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নের বাড়াইশালপাড়ার মো. গাজিউর রহমানের ছেলে। আর অপর দুইজন হলো সৈয়দপুর প্লাজার ফুড প্লেস রেষ্টুরেন্টের স্বত্তাধিকারী মো. মাহিন আহমেদ (২২) ও দুবাই রেস্টুরেন্টের মালিক ওয়াহিদ (২৮)।
সূত্র মতে, গত ২০১৮ সালে সৈয়দপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে অধ্যায়নকালে জায়েদ আলী জয়ের সঙ্গে পরিচয় হয় ওই কলেজ ছাত্রীর। একসময় জয় তাকে প্রথমে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। কিন্তু ওই ছাত্রী তা প্রত্যাখান করে।
পরবর্তীতে প্রায় সময় ওই ছাত্রীকে স্কুলে যাওয়া আসার পথে প্রেম নিবেদনের মাধ্যমে উত্ত্যক্ত করে আসছিলো ওই যুবক। এ সময় ছাত্রীটির পরিবারের পক্ষ্য থেকে যুবকের পরিবারকে অবগত করা হলে পরবর্তীতে এমনটি হবে না বলে যুবকের পরিবার মৌখিক ভাবে অঙ্গিকার করেন।
এরপর ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে যুবক জয় ওই ছাত্রীকে জরুরী কথা আছে বলে সৈয়দপুর প্লাজাস্থ আপন রেস্টুরেন্টের ডেকে নেয়। সেখানে ছাত্রীটিকে হিন্দু ধর্ম হতে ধর্মান্তরিত করে বিয়ের মিথ্যে প্রলোভনে ধর্ষণ করে।
সর্বশেষ গত ২০ মার্চ ফুড প্লেস রেস্টুরেন্টে জয় পূণরায় বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ছাত্রীটিকে ধর্ষণ করে। এরপর ফোন করে জয় ওই ছাত্রীকে সাফ জানিয়ে দেয় তাকে বিয়ে করা সম্ভব নয়।
এ অবস্থায় নিরুপায় হয়ে কলেজছাত্রী নিজে বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে জায়েদ আলী জয়ের বিরুদ্ধে বুধবার (৩০ মার্চ) রাতে সৈয়দপুর থানায় মামলা দায়ের করে। মামলা করার দুইঘন্টার মধ্যে পুলিশ জয়কে গ্রেফতার করে। জয়ের স্বীকারোক্তি মতে বৃহস্পতিবার দুপুরে মাহিন ও ওয়াহিদকে গ্রেফতার করা হয়।
সৈয়দপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল হাসনাত খান জানান, গ্রেফতার জয়ের বিরুদ্ধে ধর্ষণের এবং রেষ্টুরেন্ট মালিকদের বিরুদ্ধে ধর্ষনে সহযোগিতার অভিযোগ রয়েছে।বৃহস্পতিবার গ্রেফতারকৃত তিনজনকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, সৈয়দপুর প্লাজা সুপার মার্কেটের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় অনেকগুলো মিনি রেষ্টুরেন্ট বা কফিসপ রয়েছে। এই দোকানগুলো মূলতঃ টাইম পাস পয়েন্ট। এগুলোতে কাপল প্লেস নামে আলো আধারী কেবিন রয়েছে। এখানে উঠতি যুবক-যুবতি, কিশোর-কিশোরীরা অনায়াসে নোংরামিতে মেতে উঠে।
খাবার বিক্রি নয়, বরং এই অনৈতিক কাজের নিরাপদ আশ্রয় স্থলে পরিণত হয়েছে রেষ্টুরেন্টগুলো। প্রশাসনের নাকের ডগায় এই জঘন্য কারবার চললেও কোন প্রতিরোধ না থাকায় এধরনের রেষ্টুরেন্ট খোলার হিড়িক পড়েছে সৈয়দপুরে। গত ৬ মাসেই সৈয়দপুর প্লাজেতেই নতুন করে প্রায় ১৫-২০ টি এরকম দোকান হয়েছে।