নীলফামারীর ডোমারে ট্রেনের টিকিট কালোবাজারির সাথে ৬ জনের নাম উল্লেখ ও কয়েকজনকে অজ্ঞাতনামা করে মামলা দায়ের করেছে ডোমার রেলওয়েে স্টেসন কর্তৃপক্ষ। সেইসাথে কালোবাজারিতে অভিযুক্তির দায়ে তাৎক্ষণিক প্রত্যাহার হয়েছে ডোমার স্টেশনের বুকিং সহকারী সিহাব।

ট্রেনের টিকিটের কালোবাজারি বন্ধ এবং অপরাধীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবীতে শুক্রবার (১ এপ্রিল) মানববন্ধন করে ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দেয় ডোমারবাসী। নির্ধারিত সময় পার না হতেই নড়েচড়ে ওঠে বাংলাদেশ রেল কর্তৃপক্ষ।

ঘটনার তদন্তের জন্য পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে পাকশি বিভাগীয় রেলওয়ের বাণিজ্যিক কর্মকর্তা (ডিসিও) মো. নাসির উদ্দিন এর নেতৃত্বে ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি ২এপ্রিল (শনিবার) রাত ৮.৩০ মিনিটে ডোমার রেল স্টেশন পরিদর্শনে আসেন।

এ সময় এলাকাবাসীর পক্ষে পৌর কাউন্সিলর রুবেল ইসলাম ডোমারের অভিযুক্ত রেল কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং টিকিট কালোবাজারিদের বিরুদ্ধে দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানিয়ে লিখিত অভিযোগ প্রদান করেন। সাথে ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরননবী, ডোমার প্রেস ক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক এমদাদুল হক মাসুম, যুগ্ম সাধারন সম্পাদক মোসাদ্দেকুর রহমান সাজু, ডোমার উপজেলা সুজন’র সাধারণ সম্পাদক গোলাম কুদ্দুস আইয়ুব, বাংলাদেশ প্রেসক্লাব ডোমার উপজেলা শাখার সভাপতি জাবেদুল ইসলাম সানবীম, সাংবাদিক আতিদুল হক বাচ্চু, দৈনিক ইনকিলাব ডোমার প্রতিনিধি রাশেদুল ইসলাম আপেল, সাবেক ইউপি সদস্য নুর ইসলাম, ডোমার পৌরসভার টিকাদানকারী উজ্জ্বল কানজিলাল, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী বাবলা সহ শতাধিক এলাকাবাসী।

রেলওয়ের ডিসিও নাছির উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, অতিদ্রুত কালোবাজারিদের গ্রেপ্তার করা হবে। এ ব্যাপারে ডোমারের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সহযোগিতায় সৈয়দপুর রেলওয়ে থানার ওসিকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সকল কালোবাজারিকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। কালোবাজারি রুখতে মনিটরিং টিম গঠন করা হয়েছে, অতিদ্রুত অন্যান্য জড়িতদের আইনের আওতায় এনে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তিনি আরও জানান, ইতোমধ্যে কালোবাজারির সাথে জড়িত থাকায় ডোমার রেলওয়ে স্টেশনের বুকিং সহকারী সিহাবকে তাৎক্ষণিকভাবে সাময়িক অব্যাহতি প্রদান ও স্টেশনে কর্মরত একজন শ্রমিকের চাকুরী বাতিল করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।

ডিসিও আরও জানান, কালোবাজারি সিন্ডিকেট রুখতে সৈয়দপুর, নীলফামারী, ডোমার ও চিলাহাটি স্টেশনে ৩রা এপ্রিল থেকে বিশেষ অভিযান পরিচালনা সহ ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে জড়িতদের শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মামলার ব্যাপারে ডোমার স্টেশনের বুকিং সহকারী রাশেদ জানান, কালোবাজারি চক্রের ৬জনের নাম উল্লেখ ও কয়েকজনকে অজ্ঞাতনামা করে মামলা করা হয়েছে। সৈয়দপুর রেলওয়ে পুলিশ আসামীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন করবে।

মামলা নাম্বার সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি এড়িয়ে যান।

এ ব্যাপারে সৈয়দপুর রেলওয়ে থানার ওসি শফিউল ইসলাম জানান, কোনো মামলা হয়নি, ডোমার রেল স্টেশনের কয়েকজন কালোবাজারির নামে লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযুক্ত কালোবাজারিদের বিরুদ্ধে আমারা পদক্ষেপ নেবো।

কালোবাজারি চক্রের অভিযুক্তরা হলেন—ডোমার পৌরসভার স্টেশনপাড়ার মতিবুল ইসলাম মতি, লিটন ইসলাম, নাজমুল ইসলাম, নাছিরুল ইসলাম, খোকন ইসলাম ও ড্রাইভার রিপন।