মুক্তার হাসান, টাঙ্গাইল প্রতিনিধি:০৯ জুন-২০২২,বৃহস্পতিবার।
তাঁরা ছিলেন একাধারে মেধাবী শিক্ষার্থী। সৃজনশীল ও বৈচিত্রময় মননশীলতার অধিকারী। সংক্ষিপ্ত চাকুরী জীবনেও রেখেছেন যোগ্যতার স্বাক্ষর। ফলশ্রুতিতে তাঁরা দুজনেই সদ্ব্য সমাপ্ত ৪০তম বিসিএস এর প্রশাসন ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন। যাদের কথা বলছিলাম এরা হলেন, টাঙ্গাইল সদরে কর্মরত বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি’ ক্ষুদ্র সেচ) সহকারী প্রকৌশলী আশিক জামান (অয়ন) এবং একই পদে মির্জাপুর অঞ্চলে কর্মরত মুনতাসির মাহফুজ (রিফাত)।
এই দুই মেধাবী কর্মকর্তার সাথে কথা বলে জানা যায় তাদের উজ্জল শিক্ষা ও কর্মময় জীবনের বিভিন্ন তথ্য। আশিক জামান অয়ন জানান, তিনি ঢাকা মিরপুরের স্থায়ী বাসিন্দা হলেও তাঁর আদি নিবাস যশোর জেলার বাঘারপাড়া উপজেলায়। পিতা অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা মো. শওকত উজ্জামান এবং মাতা রেহেনা জামান। দুই ভাইবোনের মধ্যে একমাত্র বড় বোন মৌসুমী জামান ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত।
আশিক জামান, ছোটবেলা থেকেই অত্যন্ত মেধাবী পরিশ্রমী ছাত্র ছিলেন। ২০০৪ সালে প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি লাভ করে মেধা তালিকায় অষ্টম স্থান অর্জন করেন। এরপর ২০১০ সালে ঢাকা এসওএস হারম্যান মেইনার স্কুল ও কলেজ থেকে এসএসসি এবং একই প্রতিষ্ঠান থেকে ২০১২ সালে এইচএসসি পাস করেন। উভয় পরীক্ষায় তিনি জিপিএ-৫ পেয়ে মেধার স্বাক্ষর রাখেন। এরপর ২০১৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইইই বিভাগ থেকে বিএসসি এবং ২০১৮ সালে এমএসসি ডিগ্রী অর্জন করেন। শিক্ষা জীবন শেষে অয়ন ২০১৮ সালে বিএডিসিতে যোগদান করেন। তাঁর চাকুরীর প্রথম কর্মস্থল এই টাঙ্গাইলে। অদ্ব্যবধি এখানেই কর্মরত আছেন।
অয়ন আরও বলেন, ৩৮তম বিসিএসে সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার (আইসিটি) পেলেও যোগদান করেননি। এরই মধ্যে তিনি বিয়ে করেছেন। স্ত্রী রাজশাহী মেডিকেল কলেজে এমবিবিএস অধ্যয়নরত। অয়নের খেলাধুলার প্রতি বিশেষ দূর্বলতা রয়েছে। ছোটবেলা থেকেই তাঁর প্রিয় খেলা ফুটবল। প্রিয় দল আর্জেন্টিনা ও প্রিয় কাব বার্সেলোনা এবং প্রিয় খেলোয়াড় লিওনেল মেসি। সময় পেলেই তিনি কম্পিউটার গেম ’ফিফা’ খেলে থাকেন। কৃষি ক্ষেত্রে অর্জিত অভিজ্ঞতা এবং প্রকৌশলী জ্ঞান কাজে লাগিয়ে ক্রীড়াসহ দেশের সার্বিক উন্নয়নে ভ‚মিকা রাখতে চান আশিক জামান অয়ন।
অপর সুপারিশপ্রাপ্ত মুনতাসির মাহফুজ রিফাত বলেন, ৪০তম বিসিএসে তিনি মেধা তালিকায় ৯ম স্থান অর্জন করেন। তাঁর বাড়ি নীলফামারী সদরে। তিনি ২০০৯ সালে গাইবান্ধা সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং ২০১১ সালে নীলফামারী সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। উভয় পরীক্ষায় তিনি জিপিএ-৫ পেয়ে সাফল্যের সাথে উত্তীর্ণ হন। এরপর ২০১৭ সালে বুয়েট থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিএসসি ডিগ্রী অর্জন করেন। চাকুরী জীবনে তিনি প্রথমে আকিজ বায়াক্স ফিল্মস লিমিটেডে এবং পরে ২০২০ সালে বিএডিসিতে যোগদানের শুরু থেকেই তিনি টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে কর্মরত আছেন।
রিফাত বলেন, তারা বাবা মো. আব্দুর রশিদ একজন ব্যবসায়ী। মাতা মোছা. মাহফুজা বানু গৃহিনী এবং ভাই ঢাকায় সফট্ওয়ার কোম্পানীতে চাকুরীরত। ব্যক্তি জীবনে রিফাত অবিবাহিত। তুখোর মেধাবী এই প্রকৌশলী ছাত্র জীবনে কবিতা আবৃত্তি, উপস্থিত বক্তৃতা, রচনা লেখনসহ নানামুখী প্রতিযোগীতায় একাধিক পুরস্কার অর্জন করেন। তাঁর স্বপ্ন নিজের মেধা, দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে দেশের উন্নয়ন করা। দরিদ্র মানুষের মুখে হাঁসি ফুটানো তাঁর একটি মানবীয় চারিত্রিক বৈশিষ্ট। তিনি পছন্দ করেন কোরআন তেলাওয়াত ও বন্ধুদের সাথে সময় কাটানো। মানুষের দুঃখ, দুর্দশা, দ্ব›দ্ব, বিবাদ, কলহ তাঁর মনকে ব্যথিত করে।