রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫, ০২:৩৭ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ
আছিয়ার শোক শেষ না হতেই সিরাজগঞ্জে ৯ বছরের শিশু ধর্ষনের শিকার সমৃদ্ধশালী দেশ গড়তে একটি গণতান্ত্রিক  সরকার ব্যবস্থা দ্রুত দরকার—– ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু আবারো উড়লো জুলহাসের বিমান, যমুনা পাড়ে উৎসবের আমেজ মানিকগঞ্জের যুবক তৈরি করলেন বিমান সহযোগিতায় পাশে দাঁড়ালেন তারেক রহমান দৌলতপুরে নতুন ওসি আল মামুন ও সিংগাইরে তৌফিক আজম যোগদান করেছেন সারা বছরই সূলভ মূল্যে পণ্যসামগ্রী বিক্রি করা হবে ………মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা মানিকগঞ্জে কারখানায় ডাকাতি, গ্রেফতার ১১ আওয়ামী ফ্যাসিবাদী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে– এস.এ জিন্নাহ কবির ঘাটাইলে পিকনিকের চার বাসে ডাকাতির ঘটনায় গ্রেপ্তার ৪ চলন্ত বাসে ডাকাতি-শ্লীলতাহানি ডিবির জ¦ালে আরও দুই আসামি- মালামাল উদ্ধার

দৌলতপুরে যমুনা নদীর ভয়াবহ ভাঙ্গনে তিনটি স্কুলসহ এক হাজার বাড়ি নদী গর্ভে বিলীন

প্রতিনিধির নাম:
  • আপডেট করা হয়েছে: শনিবার, ১৮ জুন, ২০২২
  • ১৮৮ দেখা হয়েছে:

নিজস্ব প্রতিবেদক: ১৯ জুন- ২০২২,শনিবার।
যমুনা নদীতে বর্ষার পানি বৃদ্ধি ও থেমে থেমে প্রবল বর্ষণের ফলে মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার বাঘুটিয়া,বাচামারা,চরকাটারী এই তিন ইউনিয়নে যমুনা নদীর ভয়াবহ ভাঙ্গনে তিনটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ প্রায় ১ হাজার পরিবারের বসত ভিটে বাড়ি সহ ফসলী জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। বর্ষার পানি আসার সাথে পাল্লা দিয়ে যমুনা নদীতে শুরু হয়েছে ব্যাপক ভাঙ্গন । চোখের সামনে নিমিষেই ভিটে বাড়ি ও ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। জায়গা জমি সহায়-সম্বল হারিয়ে পরিবার নিয়ে অন্যত্র আশ্রয় নিচ্ছে অনেকেই। নদী গর্ভে শেষ আশ্রয়টুকু চলে যাওয়ায় চরম অনিশ্চয়তায় খোলা আকাশের নীচে দিন কাটছে ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্ত্র অসহায় মানুষ গুলোর। নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আকস্মিক এ ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে এভাবেই যমুনার ভাঙ্গনে ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছে অসংখ্য পরিবার। ভাঙ্গনে দিশেহারা দৌলতপুর উপজেলার যমুনা তীরবর্তী মানুষগুলো।

 

 


ইতিমধ্যে দৌলতপুর উপজেলার বাঘুটিয়া ইউনিয়নের মুন্সিকান্দি,পাচুরিয়া,ইসলামপুর, বাসাইল,জোতকাশি,রাহাতপুর,বাচামারা ইউনিয়নের বাগসাইট্টা,সুবুদ্দিয়া, নিজ ভারাঙ্গ উত্তর খন্ড, চরভারাঙ্গা দক্ষিন খন্ড,চরকাটারী ইউনিয়নের চরকাটারী মন্ডল পাড়া ,সেক পাড়া,চরগোবিন্দপুর মন্ডল পাড়া,সধিরের পাড়া ,৩৩ নং চরকাটারী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়,৩১ নং যমুনা চরকাটারী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ,চরকাটারী সবুজ সেনা উচ্চ বিদ্যালয় সহ এই তিনটি ইউনিয়নের ১৬ টি গ্রামের প্রায় ১ হাজার পরিবারের বসত ভিটা ও ফসলী জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। হুমকির মধ্যে রয়েছে আরো অসংখ্য ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট ও ফসলী জমি। ফলে চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে এসব এলাকার স্থানীয় নারী-পুরুষ ।

 

 

চরভাঙ্গার সরকার পাড়া গ্রামের আব্দুল আওয়াল, নাজির আহম্মেদ ও চরভারাঙ্গা মজুম সেকের পাড়ার আকাদত আলী,দুলাল সেক দৈনিক কালের কাগজকে  বলেন, জনপ্রতিনিধিরা প্রতিবছর নানা প্রতিশ্রুতি দিলেও স্থায়ী সমাধানের কোন উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি। আর পানি উন্নয়ন বোর্ড বর্ষা মৌসুমে জিও ব্যাগ ফেলে দায় সাড়ে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর ।

 

 

 

ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্থ চরকাটারীর আলমগীর সেক,হযরত ফকির,আক্কেল মন্ডলসহ কয়েকজন ক্ষোভ প্রকাশ করে  দৈনিক কালের কাগজকে বলেন, নদীতে ৫/৬ বার বাড়ি ভাঙ্গা দিয়ে সরিয়ে একবার এপাড়ে আসি আবার ওপাড়ে যাই । ছোট বেলা থেকে শুনে আসছি এ নদীতে বেড়িবাঁধ হবে। কিন্তু এতো বয়স হয়ে গেলে আজ পর্যন্ত বাঁধ দেখতে পারলাম না। নদীর ভাঙ্গনে ভিটে বাড়ি আবাদি জমি সব শেষ। প্রতি বছর নদীর ভাঙ্গন দেখা দেওয়ার পর পানি উন্নয়ন বোর্ড নাম মাত্র জিও ব্যাগ ফেলে যায়। এগুলো আমাদের কোনো কাজেই আসছে না।

 

 

এবিষয়ে বাচামারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ সরকার  দৈনিক কালের কাগজকে বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ¦ এ.এম নাঈমুর রহমান দূর্জয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে শুকনো মৌসুমে বাচামারা ইউনিয়নের যমুনা নদীর পূর্ব পাড়ের প্রায় ২৪ কোটির টাকার বরাদ্দ দিয়েছিল স্থায়ী ভাবে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙ্গন প্রতিরোধ করা হয়েছে। চলতি বর্ষা মৌসুমে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বাগসাইট্টা,সুবুদ্দিয়া, চরভারাঙ্গা দক্ষিন খন্ড , নিজ ভারাঙ্গা উত্তর খন্ড এলাকায় ব্যাপক ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে । ভাঙ্গনের ফলে প্রায় ৪ শতাধিক পরিবাবের বসত ভিটে বাড়ি ও ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।।

এবিষয়ে বাঘুটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস,এম আমজাদ হোসেন দৈনিক কালের কাগজকে বলেন, চলতি বর্ষা মৌসুমে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে পাল্লা দিয়ে মুন্সিকান্দি,পাচুরিয়া,ইসলামপুর, বাসাইল,জোতকাশি,রাহাতপুর ব্যাপক ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। ভাঙ্গনের ফলে প্রায় ৩ শতাধিক পরিবাবের বসত ভিটে বাড়ি ও ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

এবিষয়ে চরকাটারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আয়ুব আলী মন্ডল দৈনিক কালের কাগজকে বলেন,চলতি বর্ষা মৌসুমে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে পাল্লা দিয়ে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে।ভাঙ্গনের ফলে ৩৩ নং সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়,৩১ নং যমুনা চরকাটারী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়,চরকাটারী সবুজ সেনা উচ্চ বিদ্যালয় সহ ৩ শতাধিক বসত ভিটে বাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

এবিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড মানিকগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: মঈন উদ্দিন আহমেদ  দৈনিক কালের কাগজকে বলেন, বর্তমানে কোন বরাদ্দ নেই । বরাদ্দ পেলে পানি নেমে গেলে প্রাথমিক ভাবে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙ্গন ঠেকানো যাবে। আর কয়েক দিনের মধ্যে নদীর পাড় ডুবে যাবে জিও ব্যাগ ফেলে কোন লাভ নেই । বাচামারা এলাকায় বর্ষার আগে শুকনো মৌসুমে ২৪ কোটি টাকা ব্যয়ে দুই কি:মি নদী ভাঙ্গন রোধের কাজ করেছি।

এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো: ইমরুল হাসান  দৈনিক কালের কাগজকে বলেন, ভাঙ্গন রোধে বাচামারা এলাকায় জিও ব্যাগ দিয়ে ভাঙ্গন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড কাজ করেছে। সরকার ভাঙ্গন রোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহন করেছে । নদী ভাঙ্গন ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা পাইনি । তালিকা পেলে প্রয়োজনীয় প্রদক্ষেপ নেওয়া হবে ।####

 

 

 

 

আর্টিকেলটি শেয়ার করুন:

এই ক্যাটাগরির আরো খবর
© All rights reserved ©
themesba-lates1749691102