তুহিন হোসেন, পাবনা :১২ আগস্ট-২০২২,শুক্রবার।
ঈশ্বরদীতে প্রশাসনের হাতকড়া পড়িয়ে ছিনতাইয়ের অভিযোগ করেছে মো. রাকিবুল ইসলাম (২০) নামে এক যুবক। গত ১০ আগস্ট রাতে উপজেলার ছলিমপুর ইউনিয়নের চরমিরকামরী দাইড়পাড়া গোরস্থান এলাকায় এ ছিনতাইয়ের ঘটানা ঘটেছে।
অভিযুক্ত রাকিবুল ইসলাম ঈশ্বরদী শহরের পৌরসভার ঈদগা রোড আমবাগান এলাকার মো. আব্দুল আলিমের ছেলে। এ বিষয়ে ঈশ্বরদী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছে অভিযোগ কারী।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ১০ আগস্ট বৃহস্পতিবার নিজের ব্যক্তিগত কাজ শেষে রাত আনুমানিক ৯.৪৫ ঘটিকার সময় রুপপুর মোড় এলাকা থেকে রওনা হয়ে তার শ্বশুরালয়ে যাওয়ার জন্য ছলিমপুর ইউনিয়নের সাকড়েগাড়ী হয়ে চরমিরকামারী গোরস্থান পাড়ার কাছাকাছি এলে পথিমধ্যে তার গতি রোধ করে দুটি মোটর সাইকেল তার সামনে দাঁড়ায়। কোনকিছু বুঝে ওঠার আগেই আরও দুটি মোটর সাইকেলসহ দুটি গাড়ীতে অজ্ঞাত মোট সাতজন (৭) তাকে গাড়ী থেকে নামতে বলেন। এসময় তাদের মধ্য থেকে একজন এসে তার হাতে প্রশাসনের ব্যবহৃত একটি হাতকড়া পড়িয়ে দেন এবং তার দেহ তল্লাশী শুরু করেন। তল্লাশীকালে তার কাছে থাকা নগদ সাত হাজার পাঁচশত টাকা (৭৫০০) এবং তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি চক্রের সদ্যরা হাতিয়ে নেয়।
অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, এদের মধ্য থেকে অপর আরেকজন রাকিবুলের হাতে একটি মদের বোতল ধরিয়ে দেন এবং সেই মদের বোতলসহ তার একাধিক ছবি তুলে নেন। মদের বোতলসহ তোলা তার ছবি দিয়ে এবার ছিনতাইকারীরা তাকে ব্ল্যাকমেইল করতে থাকে। ব্ল্যাকমেইল এক সময় রুপনেয় শারিরিক নির্যাতনে।
এসময় নির্যাতনকারীরা তাকে মদসহ পাওযার অভিযোগে ডিবির হাতে তুলে দেবার হুমকিসহ তাকে বেদম প্রহার করতে থাকে। প্রহারের এক পর্যায়ে রাকিবুলের বাড়ী থেকে দেড় লক্ষ টাকা ( ১,৫০,০০০) চাঁদা দাবি করেন ছিনতাইকারীরা। সে সময় রাকিবুল সেই টাকা তার পরিবার দিতে পারবেনা বলে জানালে তাকে পঞ্চাশ (৫০) হাজার টাকা দিতে বলেন। রাকিবুল তার বাবা অসুস্থ জানান এবং তাদের পক্ষে কোন টাকা দেয়া সম্ভব না বলে জানালে তাকে অপহরনকারীরা পুনরায় বেদম প্রহার শুরু করে। প্রাণে বাঁচতে রাকিবুল দশ (১০) হাজার টাকা দেবার কথা স্বীকার করেন এবং সেই টাকা তার দুলাভাই মো. রাব্বি রাকিবুলের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে ( যার নাম্বার ০১৭৮৬০৫৯৯০০ নাম্বারে) পাঠিয়ে দেন।
এ বিষয়ে রাকিবুল অভিযোগে আরও জানান, আমার মোবাইলের বিকাশে টাকা ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে ছিনতাইকারীরা আমার ফোনের ভেতর থেকে আমার সিমটি খুলে নেয় এবং আমাকে আমার বিকাশের পিন নাম্বার বলতে বাধ্য করে তারা দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন। অতঃপর ভীত সন্তুস্ট রাকিবুল পরের দিন ১১ আগস্ট তার খোয়া যাওয়া সিমটি রিপ্লেস করে এবং থানায় এসে একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ অরবিন্দ সরকার জানান, ছিনতাইয়ের একটি অভিযোগ থানায় দাখিল হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করলে ঘটনার ফলাফল জানাযাবে।
উল্লেখ্য এর আগে জুলাইয়ের ১ তারিখে উপজেলার দরগাবাজার এলাকার ইমদাদ (৩০) নামের এক যুবককে অনলাইনে জুয়া খেলার সাথে জড়িত থাকার অপরাধে পুলিশ পরিচয়ে রাতে উঠিয়ে নিয়ে যায় এবং গভীর রাত পর্যন্ত অজ্ঞাতস্থানে রেখে ঐ রাতেই চল্লিশ হাজার টাকা নিয়ে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। ঈশ্বরদী থানা পুলিশ বলে জানিয়ে ছিল তাদের কোন টিম সেদিন কাউকে গ্রেফতার করেনি। ওই ঘটনায় কে ছিল পুলিশ নাকী ভুয়া পুলিশ? আজ পর্যন্ত ধোয়াশার মধ্যেই রয়ে গেছে ঘটনা নেপথ্যের কাহিনী।