বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫, ১১:০৫ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ
আবারো উড়লো জুলহাসের বিমান, যমুনা পাড়ে উৎসবের আমেজ মানিকগঞ্জের যুবক তৈরি করলেন বিমান সহযোগিতায় পাশে দাঁড়ালেন তারেক রহমান দৌলতপুরে নতুন ওসি আল মামুন ও সিংগাইরে তৌফিক আজম যোগদান করেছেন সারা বছরই সূলভ মূল্যে পণ্যসামগ্রী বিক্রি করা হবে ………মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা মানিকগঞ্জে কারখানায় ডাকাতি, গ্রেফতার ১১ আওয়ামী ফ্যাসিবাদী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে– এস.এ জিন্নাহ কবির ঘাটাইলে পিকনিকের চার বাসে ডাকাতির ঘটনায় গ্রেপ্তার ৪ চলন্ত বাসে ডাকাতি-শ্লীলতাহানি ডিবির জ¦ালে আরও দুই আসামি- মালামাল উদ্ধার ঘাটাইলের সড়কে শিক্ষা সফরের চার বাসে ডাকাতি আগামীতে ধানের শীষে ভোট দিতে হবে । ধানের শীষের বিকল্প নাই

টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলা বিএনপির ত্যাগী নেতাকর্মীরা বৈষম্যের শিকার!

প্রতিনিধির নাম:
  • আপডেট করা হয়েছে: মঙ্গলবার, ৮ অক্টোবর, ২০২৪
  • ১২৬ দেখা হয়েছে:

জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল, টাঙ্গাইল:০৭ অক্টোবর-২০২৪,সোমবার।
পতিত স্বৈরাচার সরকারের দু:সময়ে দল ও দলীয় নেতাকর্মীদের ধরে রাখা টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার বিএনপির ও এর অঙ্গ সংগঠনের ত্যাগী নেতাকর্মীরা বৈষম্যের শিকার(!) হচ্ছেন। স্বৈরশাসকের পতনের পর নিজ দলের উঠতি বয়সী অতিউৎসাহী নেতাদের বৈষম্যমূলক আচরণের কারণে স্থানীয় বিএনপি ত্রি-ধারায় বিভক্ত হয়ে পড়েছে।
জানাগেছে, স্বৈরাচার আওয়ামী সরকারের ১৫-১৬ বছরে বিএনপি নেতাকর্মীদের কোন কর্মসূচি পালন করতে দেওয়া হয়নি। উপরন্তু দলীয় নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে ঢুকানো হয়েছে। নিজেদের সুবিধাজনক স্থানে দলীয় কর্মসূচি পালন করতে গেলেও আওয়ামীলীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের মারপিট করেছে। দলের ওই দু:সময়ে নেতাকর্মীদের পাশে দাঁড়ানো ও মামলার খরচ চালানো সহ নানা সঙ্কটে বিএনপির হাল ধরে রাখা নেতারা পদ-পদবী হারিয়ে এক প্রকার কোনঠাসা হয়ে পড়েছেন।
উল্লেখিত কারণে কালিহাতী উপজেলা বিএনপি মূলত তিন ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। এক অংশে রয়েছে- কেন্দ্রীয় বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক তারুণ্যদ্বীপ্ত নেতা বেনজির আহমেদ টিটো। দ্বিতীয়াংশে রয়েছে দীর্ঘ সময় দলের জন্য নিবেদিত- জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ও ঢাকা মহানগর সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার আব্দুল হালিম, কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য শিল্পপতি লুৎফর রহমান মতিন, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) আজীবন সদস্য ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ শাখার উপদেষ্টা ডা. মো. শাহআলম, টাঙ্গাইল জেলা জিয়া পরিষদের সভাপতি ও কারা নির্যাতিত শিক নেতা একেএম আব্দুল আউয়াল, কালিহাতী উপজেলা বিএনপির সাবেক আহŸায়ক শুকুর মাহমুদ ও এলেঙ্গা পৌরসভার সাবেক মেয়র মো. শাফী খান এবং মালয়েশিয়া বিএনপির সভাপতি বাদলুর রহমান খান।
তৃতীয়াংশে রয়েছে- মহান স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠক সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত শাজাহান সিরাজের কন্যা ব্যরিস্টার সারওয়াত সিরাজ ওরফে শুকা সিরাজ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আওয়ামীলীগের দু:শাসনের ১৫-১৬ বছরে কালিহাতী উপজেলা বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের ৪৬৫ জন নেতাকর্মীকে আসামি করে ১৩টি মামলা দায়ের করা হয়। ওই ১৩টি মামলায় উপজেলা বিএনপির সাবেক আহŸায়ক শুকুর মাহমুদ ও টাঙ্গাইল জেলা জিয়া পরিষদের সভাপতি সহ অনেকে জেল-হাজত খেটেছেন। হাজতে থাকা নেতাকর্মীদের জামিন ও মামলাগুলো পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করেছেন- এলেঙ্গা পৌরসভার সাবেক মেয়র মো. শাফী খান, জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার আব্দুল হালিম, শিল্পপতি লুৎফর রহমান মতিন, ড্যাবের আজীবন সদস্য ডা. মো. শাহআলম। তারা নেতাকর্মীদের জামিন করাতে এবং দলকে উজ্জীবিত রাখতে অর্থ ও সময় ব্যয় করে শ্রমও দিয়েছেন। স্থানীয় নেতাকর্মীদের নানা সমস্যায় পাশে দাঁড়িয়েছেন। তাদের নেতৃত্বে উপজেলা বিএনপির ত্যাগী নেতাকর্মীরা মূলত একাট্টা রয়েছেন।
মহান স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠক সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত শাজাহান সিরাজের কন্যা ব্যরিস্টার সারওয়াত সিরাজ ওরফে শুকা সিরাজ দলের দু:সময়ে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের খোঁজখবর রাখেননি। বরং বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের পাতানো নির্বাচনে অংশ নেন। ফলে কালিহাতী উপজেলা বিএনপির সব ধরনের নেতাকর্মীরা তাকে প্রত্যাখ্যান করেন। বাধ্য হয়ে তিনি প্রয়াত বাবা শাজাহান সিরাজের অনুসারীদের একাট্টা করার প্রয়াস পান।
তৃণমূলের নেতাকর্মীরা জানায়, কেন্দ্রীয় বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মনোনীত হওয়ার পর ২০২২ সাল থেকে বেনজির আহমেদ টিটো কালিহাতীতে যাতায়াত শুরু করেন। তিনি উপজেলা বিএনপির সিনিয়র নেতাদের বয়কট করে মো. মজনু মিয়াকে আহŸায়ক, মো. শাফি খানকে যুগ্ম-আহŸায়ক ও রফিকুল ইসলামকে(ভিপি রফিক) সদস্য সচিব করে ৫২ সদস্য বিশিষ্ট আহŸায়ক কমিটি গঠন করা হয়। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে ২০২২ সালের ১০ মার্চ রাতে জেলা বিএনপির তৎকালিন আহŸায়ক অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান ও সদস্য সচিব মাহমুদুল হক সানু ওই কমিটির অনুমোদন দেন। এদিন জেলার আরও সাতটি উপজেলা ও পৌরসভার আহŸায়ক কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়। মূলত তখন থেকে উপজেলা বিএনপির মধ্যে অভ্যন্তরীণ কোন্দল প্রকাশ্যে আসতে থাকে। ওই সময় কালিহাতী উপজেলা বিএনপির আহŸায়ক কমিটি নিয়ে নানা সমালোচনা হলেও দলের শীর্ষ নেতারা কর্ণপাত করেন নি। চলতি বছর স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার পতনের পর উপজেলা বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল প্রকাশ্য রূপ পায়। বর্তমানে বিভক্ত উপজেলা বিএনপি পৃথকভাবে দলের কেন্দ্রীয় কর্মসূচিগুলো পালন করছে।
কালিহাতী উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম(ভিপি রফিক) জানান, কাউকেই দল থেকে বাদ দেওয়া হয়নি। পুরোমাত্রায় গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সম্মেলনের মাধ্যমে ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও উপজেলা বিএনপির কমিটি গঠন করা হয়েছে। সাংগঠনিক তৎপরতা বিবেচনা করে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা কমিটি গঠন করেছে। তবে কোন কোন নেতা স্বইচ্ছায় অব্যাহতি নিয়েছেন। তারা আবার সক্রিয় হলে দল তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।
তিনি জানান, দলের সিনিয়র নেতারা কেন বা কি কারণে আলাদাভাবে দলীয় কর্মসূচি পালন করছেন- তা তিনি জানেন না। তবে তাদের কর্মসূচিতে সিনিয়র নেতারা যোগ দিলে তারা অবশ্যই স্বাগত জানাবেন।
দ্বিতীয়াংশের নেতা জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার আব্দুল হালিম, এলেঙ্গা পৌরসভার সাবেক মেয়র মো. শাফী খান, ড্যাবের আজীবন সদস্য ডা. মো. শাহআলম, পেশাজীবী নেতা একেএম আব্দুল আউয়াল জানান- কেন্দ্রীয় বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজির আহমেদ টিটো সিনিয়র নেতাদের উপেক্ষা করে সাংগঠনিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে উপজেলা ও ইউনিয়ন কমিটিগুলো গোপণে গঠন করেছেন। তাঁর গঠিত কমিটিগুলোতে স্থানীয় বিএনপি পরিবারকে মূল্যায়ন করা হয়নি। তরুণ নেতৃত্বের অযুহাতে স্থানীয় বিএনপির ত্যাগী নেতাদেরকে পাশ কাটানো হয়েছে। ফলে অবমূল্যায়িত হয়ে তারা একতাবদ্ধ হয়েছেন।
তারা মনে করেন, স্থানীয় বিএনপির রাজনীতিতে বেনজির আহমেদ টিটো স্বীয় স্বার্থে অপরিপক্ক ও অদূরদর্শী সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করছেন- যা আগামি দিনে বিএনপির জন্য কোন সুফল বয়ে আনবেনা। তাঁর সম-সাময়িক কর্মকান্ডই স্থানীয় বিএনপিতে দ্বিধাবিভক্ত করছে। কেন্দ্রীয় বিএনপির এ বিষয়ে দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন।
কেন্দ্রীয় বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজির আহমেদ টিটো জানান, কালিহাতী উপজেলা বিএনপি বর্তমানে অন্য যেকোন সময়ের চেয়ে সাংগঠনিকভাবে অধিকতর শক্তিশালী। প্রথমে কর্মী সম্মেলন করার পর সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটিগুলো গঠন করা হয়েছে। ঘরে বসে কমিটি ঘোষণা করা হয় নাই। আওয়ামী দু:শাসনের সময়ে উপজেলার ১৩৬ ওয়ার্ডে নেতাকর্মীদের মতামতের ভিত্তিতে প্রকাশ্যে কমিটি গঠন করা হয়েছে। ইউনিয়ন কমিটিগুলো বড় বড় সম্মেলনের মাধ্যমে গঠন করা হয়েছে।
তিনি জানান, বিএনপির কমিটি থেকে কেউ কাউকে বাদ দেয়নি। যার যার কর্মতৎপরতার উপর ভিত্তি করে নেতাকর্মীরা কমিটি গঠন করেছে। ২০১৬ সালে বিরোধী দলের নেতাদের সুরক্ষার চাপ সইতে না পেরে লুৎফর রহমান মতিন স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করে দল থেকে চলে গেছেন। এখন যারা তাঁর সম্পর্কে অপপ্রচার বা নেতিবাচক কথা বলছেন তারা ঈর্ষান্বিত হয়ে বলছেন।

 

আর্টিকেলটি শেয়ার করুন:

এই ক্যাটাগরির আরো খবর
© All rights reserved ©
themesba-lates1749691102