মুহ.মিজানুর রহমান বাদল, মানিকগঞ্জ:০৫ নভেম্বর-২০২৪,মঙ্গলবার।
মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার গোবিন্দল গ্রামে ২০১৩ সালের আলোচিত ৪ হত্যাকান্ডের ঘটনায় সাবেক এমপি কন্ঠ শিল্পী মমতাজ বেগমসহ ৮২ জনের নামে আদালতে আরো একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে নিহতের স্ত্রী রাফেজা বেগম। মামলাটি করেন নিহত আলমগীর হোসেনের স্ত্রী গোবিন্দল মোল্লাপাড়া গ্রামের মো. রফেজ উদ্দিনের মেয়ে রাফেজা (৩৭)।
এর আগে গেল অক্টোবর মাসে আলাদা ভাবে দুটি মামলা দায়ের করেন দুই নিহতের দুই স্বজন। এ মামলায় আরো আসামী করা হয়েছে তৎকালীন মানিকগঞ্জ সদর সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার,ডিবি পুলিশের একাধিক পরিদর্শক, ৩৭ পুলিশ সদস্যসহ ৮২ জন এবং অজ্ঞাত ২৫ জনসহ সব মিলিয়ে ১০৭ জনের বিরুদ্ধে এ মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সোমবার (৪নভেম্বর) সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত সিংগাইরে হত্যাটি মামলাটি দায়ের হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সুত্রমতে, ২০১৩ সালে ২৪ ফেব্রুয়ারি আনুমানিক সকাল ১০টার হতে দুপুর ১ ঘটিকা পর্যন্ত সময়ে ইসলাম ও সমমনা দল সমূহের পূর্ব ঘোষিত সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালন কালে সিংগাইর গোবিন্দল নতুন বাজার চার রাস্তার মোড়ে হেমায়েতপুর টু মানিকগঞ্জগামী আঞ্চলিক মহাসড়কে হরতালের সমর্থনে শতশত ধর্মপ্রাণ সাধারণ মানুষের উপস্থিতিতে জনসমাবেশ জনস্রোতে পরিণত হলে চরম ইসলাম বিদ্বেষী ও বিগত স্বৈরশাসক সরকার দলীয় আসামীদের ছোঁড়া গুলিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে আলমগীর, নাসির, নাজিমুদ্দিন মোল্লা ও শাহ আলমসহ চারজন নিহত হন।
এ মামলায় অন্যান্য আসামী হলেন, মানিকগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও বলধরা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল মাজেদ খান, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক শহিদুর রহমান ভিপি শহিদ (৫০) ,সদ্য বিদায়ী উপজেলা চেয়ারম্যান সায়েদুল ইসলাম (৫০)। এছাড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সহসভাপতি রমজান আলী চেয়ারম্যান, শওকত হোসেন বাদল,সিংগাইর দলিল লেখক সমিতির সাবেক সাধারন সম্পাদক আজিমপুরের মৃতঃ নুরুল হক ফকিরের ছেলে মনিরুল ইসলাম পলাশ (৪০) সহ ৮২ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরো ২০ থেকে ২৫ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এছাড়া আসামী পুলিশ সদস্যরা হচ্ছেন, তৎকালীন দায়িত্ব থাকা মানিকগঞ্জ সদরের সার্কেল সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. কামরুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ ডিবি পুলিশের ওসি মো. মহিবুল আলম, মদন মোহন বণিক, মোহাম্মদ রবিউল ইসলাম, সিংগাইর থানার এস আই আদিল মাহমুদ, মোজাম্মেল হোসেনসহ ৩৭ জন।
আলোচিত হত্যা মামলার বাদী নিহত আলমগীর হোসেনের স্ত্রী রাফেজা’র মামলায় অভিযোগ করে বলেন, পুলিশ আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ দায়িত্ব পালন না করে উল্টো তারাই পুলিশের পোষাক পরিধান করে এলোপাথারী গুলি বর্ষণ করে হত্যাকান্ডে অবৈধভাবে অংশগ্রহণ করেন। তিনি আরো বলেন -আমার স্বামীর দাফন কাফনের কাজে ব্যস্ত থাকায় আমার পক্ষে মামলার স্বাক্ষী মিঠু চেয়ারম্যান এজাহার দায়ের করিতে থানায় গেলে থানা কর্তৃপক্ষ মামলা গ্রহণ না করিয়া উল্টো হুমকি দিয়ে বলেন, বেশি বাড়াবাড়ি করলে মামলায় আসামি করে চালান দিয়ে দিবো। তিনি ভয়ে থানা হইতে দ্রুত চলে আসেন।
সিংগাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহিদুল ইসলাম মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন,পৃথক তিনটি হত্যা মামলার আসামিদের গ্রেফতারের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।